শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১১

চলনবিলে মাছ স্বল্পতায় শুটকির উৎপাদন ক্রমেই কমে আসছে



বড়াইগ্রাম নিউজ:নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলা নিয়ে গঠিত চলনবিলে বর্তমানে মাছ স্বল্পতায় শুটকির উৎপাদন ক্রমেই কমে আসছে। হাজার হাজার মানুষ জীবন জীবিকার সন্ধানে নৌকা দিয়ে চলনবিলের মাছ ধরে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। এলাকার মাছ মানুষের চাহিদা মেটানোর পর অবশিষ্ট মাছ বিলপাড়ের মানুষ শুঁটকি তৈরি করে রাখত। কিন্তু বর্তমানে চলনবিলে আগের মতো মাছ না পাওয়ায় শুঁটকিও তেমন তৈরি হচ্ছে না।
জানা যায়, ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এই প্রবাদটি এক সময় চলনবিলের মানুষের মুখে মুখে শোনা যেত। এক সময় মাছ, পাখি আর মাছের শস্যভাণ্ডার বলা হতো এই চলনবিলকে। পানি আর মাছ সমান তালে ছিল চলনবিলে। চলনবিল পাড়ের মানুষ সারাবছর মাছ ধরে খেত। কালের পরিক্রমায় অনেক কিছুই চলনবিল থেকে হারিয়ে গেছে। বর্তমানে সার, কিটনাশক ও রাসায়নিক পদার্থের কারণে অনেক মাছ চলনবিল থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাছাড়া নানা উপকরণ দিয়ে মাছ ধরা ও মা মাছ বেশি ধরার কারণে মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। মৎস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলে মিঠা পানির সুস্বাদু মাছের পাশাপাশি শুঁটকি উৎপাদন ও ব্যাপক চাহিদা ছিল দেশ-বিদেশে। বর্ষা মৌসুম থেকে শুরু করে ৪/৫ মাস চলনবিলে প্রায় ২ শতাধিক শুঁটকি মাছের চাতাল তৈরি করে এক শ্রেণীর মানুষ শুঁটকি বিক্রয় করে প্রচুর টাকা আয় করত। চলনবিলের বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, ফরিদপুর, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, সিংড়া, আত্রাই উপজেলার বিলে শতশত শুঁটকির চাতালে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকার শুঁটকি উৎপাদন হতো এবং শুঁটকির চাতালে শত শত নারী -পুরুষ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। সেই সময় মাছের দাম তুলনামূলক কম ছিল। কিন্তু আগের মতো আর মাছও নেই শুঁটকিও তেমন তৈরি হয় না। দিন দিন মাছের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে শুঁটকির জন্য প্রয়োজনীয় মাছ না পাওয়ায় চাতালের সংখ্যাও কমে আসতে শুরু করেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন